মা বলছেন, ‘ওরা আমার ছেলেকে দা দিয়ে কোপালো’

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় পারিবারিক বিরোধ থামাতে গিয়ে দুই ভাইয়ের হাত ধরে জান্নাত হোসেন (২৭) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার ফাঁদে ফেলা হয়েছিল।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে গজারিয়ার নয়ানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জান্নাত হোসেন ওই গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে তারেক ও রিয়াদ নামে দুই প্রতিবেশী ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক ও জমি সংক্রান্ত একটি ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়া থামানোর জন্য তারেকের মা তাসলিমা বেগম জান্নাত হোসেনকে ডেকে নিয়ে যান।

ঘটনার সময় দুই ভাইয়ের হাতে ধারালো রামদা ছিল। একপর্যায়ে তারা জান্নাতকে কোপাতে শুরু করে। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মারিয়া মোস্তারি বলেন, “সকাল ১১টার দিকে জান্নাতকে আনা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে তিনি মৃত ঘোষণা করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ মৃত্যুর প্রধান কারণ হতে পারে।”

নিহতের মা জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। তাসলিমা এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। আমি পেছনে পেছনে যাই। ঘরে ঢোকার আগেই তারা দা দিয়ে আমার ছেলেকে কোপাতে শুরু করে। আমার ছেলে শুধু আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি এই শোক কিভাবে সহ্য করব?”

নিহতের বড় ভাই রাজু অভিযোগ করেন, “বাড়ির সীমানা নিয়ে আমাদের পূর্ব থেকেই বিরোধ ছিল। তারা জোরপূর্বক জায়গা দখল করে ঘর তুলেছে। যখন আমার ভাইকে কুপানো হচ্ছিল, তখন কেউ আমাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নি।”

গজারিয়া থানার ওসি মো. হাসান আলী বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

ঘটনার সংক্ষিপ্ত তথ্য

বিষয়তথ্য
নিহতের নামজান্নাত হোসেন
বয়স২৭ বছর
বসবাসনয়ানগর গ্রাম, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ
ঘটনার তারিখ ও সময়২০ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল
ঘটনার স্থাননয়ানগর গ্রাম, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ
হামলাকারীতারেক ও রিয়াদ (প্রতিবেশী দুই ভাই)
অস্ত্রধারালো রামদা
হাসপাতালে মৃত্যু নিশ্চিতহামদর্দ জেনারেল হাসপাতাল, সকাল ১১টা
থানার কর্মকর্তাওসি মো. হাসান আলী

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পারিবারিক ও জমি বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডটির পেছনে পরিকল্পিত প্ররোচনা থাকার সম্ভাবনাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।