ঢাকা: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অপরাধ ও অপস) খন্দকার রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফয়সাল করিম বাংলাদেশের সীমান্ত পার হয়ে গেছেন কি না বা দেশে আছেন কি না—এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত তথ্য নেই। তবে তদন্তকারীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি রফিকুল ইসলাম, ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম, বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান, র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী এবং পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশনস) এ এইচ এম শাহাদাৎ হোসাইন।
ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রধান আসামির অবস্থান বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। দেশে আছেন কি, দেশের বাইরে চলে গেছেন—এ তথ্য আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।” এ হত্যাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, হত্যার পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।
বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন ফিলিপ নামে ব্যক্তি মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত। বিজিবি তাকে গ্রেপ্তারের জন্য সবরকম গোয়েন্দা তৎপরতা চালাচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
জানা যায়, শরিফ ওসমান বিন হাদি ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর মতিঝিল এলাকায় প্রচার শেষে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটায় দুর্বৃত্তরা। ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
ফয়সাল করিম মাসুদকে প্রধান আসামি হিসেবে শনাক্ত করা হলেও তার মা-বাবা, স্ত্রী ও শ্যালকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ফয়সাল করিমের অবস্থান নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা এখনও নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেননি। পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি রফিকুল ইসলাম বলেন, “গুজব ছড়ানোর বিষয়গুলো যাচাই করা হচ্ছে। যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গ্রেপ্তার ও তদন্ত সংক্রান্ত তথ্য (টেবিল)
| বিষয় | তথ্য |
|---|---|
| হত্যাকাণ্ডের তারিখ | ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ |
| শহীদ হাদির মৃত্যু | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ |
| প্রধান আসামি | ফয়সাল করিম মাসুদ |
| গ্রেপ্তার | মা-বাবা, স্ত্রী, শ্যালকসহ ১০ জন |
| তদন্তকারী সংস্থা | পুলিশ, র্যাব, ডিবি, বিজিবি |
| আসামির অবস্থান | দেশে বা বিদেশে, নিশ্চিত তথ্য নেই |
| সন্দেহভাজন পাচারকারী | ফিলিপ |
| আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি | অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ চলছে |
সংবাদে দেখা যাচ্ছে, ফয়সাল করিমের অবস্থান এবং হত্যাকাণ্ডের পেছনের রাজনৈতিক কারণ নিয়ে তদন্ত এখনো চলমান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য যাচাই করে ঘটনার সঠিক চিত্র উদঘাটনের চেষ্টা করছে।
