আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলে নির্বাচনী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ব্যাংক খোলার রাখার জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী শনিবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও সারা দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের শাখাগুলো খোলা থাকবে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বিশেষ চিঠির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নির্দেশনা জারি করেছে। মূলত প্রার্থীদের জামানত সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি বা তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর (সোমবার) হচ্ছে মনোনয়নপত্র দাখিলের চূড়ান্ত সময়। তবে ক্যালেন্ডারের হিসেবে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি এবং ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর যথাক্রমে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এই টানা তিন দিন ব্যাংক বন্ধ থাকলে নির্বাচনী প্রার্থীদের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমার আনুষঙ্গিক ফি এবং জামানতের টাকা জমা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ত। প্রার্থীদের আর্থিক লেনদেনের এই জটিলতা দূর করতে এবং নির্বাচনি কার্যক্রমকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নির্বাচন কমিশন গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেয়। সেই আবেদনের যৌক্তিকতা বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিশেষ কর্মদিবস ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রার্থীদের জামানত প্রদান, ভোটার তালিকার সিডি ক্রয়ের অর্থ জমা দেওয়া এবং সরকারি কোষাগারে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে অর্থ জমা দেওয়ার সুবিধার্থেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এছাড়াও ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার ইস্যু করার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের ধীরগতি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। এর ফলে সারা দেশের আগ্রহী প্রার্থীরা ছুটির দিনেও কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই তাদের আর্থিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সক্ষম হবেন।
একনজরে নির্বাচনী বিশেষ ব্যাংকিং কার্যক্রমের তথ্যচিত্র
| বিষয়ের শিরোনাম | সংশ্লিষ্ট তথ্য ও বিবরণ |
| বিশেষ কর্মদিবস | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (শনিবার) |
| আদেশের উৎস | বাংলাদেশ ব্যাংক (নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে) |
| ব্যাংকের আওতা | দেশের সকল তফসিলি ব্যাংকের সকল শাখা |
| মূল কার্যক্রম | জামানত গ্রহণ, ট্রেজারি চালান ও পে-অর্ডার ইস্যু |
| প্রেক্ষাপট | ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ |
| মনোনয়ন জমা | শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ |
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার ফলে মাঠ পর্যায়ের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কিছুটা ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেলেও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে যারা দূর-দূরান্ত থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য ট্রেজারি চালান বা পে-অর্ডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি সংগ্রহ করার জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। ব্যাংকগুলোকে এই বিশেষ কর্মদিবসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এবং জনবল সচল রাখার জন্য পৃথক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরিশেষে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শনিবার ব্যাংকগুলো খোলা থাকার ফলে প্রার্থীদের প্রার্থিতা নিশ্চিতকরণের পথে যে আর্থিক ও সময়গত জটিলতা তৈরির সম্ভাবনা ছিল, তা অনেকাংশেই প্রশমিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
