সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের জলসীমা থেকে মাছ ধরার সময় ফের ১৩ জন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ও দুপুরে দুই পৃথক অভিযানে তাদের আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় সেন্টমার্টিনের স্থানীয় জেলেরা আতঙ্কে ভুগছেন।
আটক জেলেদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। তারা হলেন—সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ (৬০), হামিদ হোসেন (৪৫), মো. হামপুরো (১৫), জসিম উদ্দিন (১৮), হারুন মিয়া (৪০) এবং টেকনাফের শামলাপুরের বাসিন্দা মো. হাবিবুল্লাহ (৬০)। বাকি সাত জেলের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
স্থানীয় জেলে কলিম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে, মিয়ানমারের মংডু এলাকার কাছে কয়েকজন জেলে মাছ ধরছিলেন। এসময় আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা প্রথম নৌকাটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে ছয়জন জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নেন। তাদের নৌকা, মাছ ও জালও জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে দুপুর ১২টার দিকে ফেরত আসার পথে একই এলাকায় একটি আরও নৌকা লক্ষ্য করে আরাকান আর্মির সদস্যরা সাতজন জেলেকে ধরে নিয়ে যান। স্থানীয়দের মতে, এই ধরণের ঘটনা সেন্টমার্টিন ও উপকূলীয় এলাকার জেলেদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
জেলেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, আটককৃতদের মুক্তি এবং নিরাপত্তা বিষয়ে তারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে বিজিবি বা কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রোগ এবং দুর্ভিক্ষের পাশাপাশি সাগরে মাছ ধরা বাংলাদেশের উপকূলীয় অর্থনীতির অন্যতম অবলম্বন। এ ধরনের পরিস্থিতি স্থানীয় অর্থনীতি ও জেলেদের জীবিকা সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে।
আটক জেলেদের তথ্য টেবিল:
| ক্রমিক | নাম | বয়স | স্থায়ী ঠিকানা | অভিযানকাল |
| ১ | নুর মোহাম্মদ | ৬০ | সেন্টমার্টিন | সকাল |
| ২ | হামিদ হোসেন | ৪৫ | সেন্টমার্টিন | সকাল |
| ৩ | মো. হামপুরো | ১৫ | সেন্টমার্টিন | সকাল |
| ৪ | জসিম উদ্দিন | ১৮ | সেন্টমার্টিন | সকাল |
| ৫ | হারুন মিয়া | ৪০ | সেন্টমার্টিন | সকাল |
| ৬ | মো. হাবিবুল্লাহ | ৬০ | শামলাপুর, টেকনাফ | সকাল |
| ৭-১৩ | অজানা | – | অজানা | দুপুর |
স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন, দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই পরিস্থিতি পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলেরা চাইছেন সীমান্তে টহল জোরদার করা হোক এবং আটককৃতদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।
