বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ১ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশ্ববাজারের এই প্রভাব এবং স্থানীয় বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
Table of Contents
১. বিশ্ববাজারের বর্তমান পরিস্থিতি
আন্তর্জাতিক বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ‘রিস্ক-অফ’ (Risk-off) মনোভাব তৈরি হওয়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে।
স্পট গোল্ড: ১.৩% বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্স ৩,৯৮১.২৭ ডলারে পৌঁছেছে।
মার্কিন ফিউচার: ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য স্বর্ণের দাম ০.৮% বেড়ে প্রতি আউন্স ৩,৯৯১.৯০ ডলার হয়েছে।
ডলারের প্রভাব: ডলার সূচক ০.১% কমে যাওয়ায় অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহারকারীদের কাছে স্বর্ণ কেনা সাশ্রয়ী হয়েছে, যা দাম বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
২. দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন মূল্যতালিকা
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী ৫ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া স্বর্ণের দাম নিচে দেওয়া হলো:
| স্বর্ণের মান (ক্যারট) | প্রতি ভরির দাম (টাকা) |
| ২২ ক্যারেট (১১.৬৬৪ গ্রাম) | ২,০১,৭৭৬ টাকা |
| ২১ ক্যারেট | ১,৯২,৫৯৬ টাকা |
| ১৮ ক্যারেট | ১,৬৫,০৮১ টাকা |
| সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ | ১,৩৭,১৮০ টাকা |
দ্রষ্টব্য: সর্বশেষ ১ নভেম্বর প্রতি ভরিতে ১,৬৮০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দামের সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা মিলিয়ে এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩. কেন বাড়ছে স্বর্ণের দাম?
বিশ্লেষকদের মতে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণে স্বর্ণের বাজারে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে:
শেয়ার বাজারের অস্থিরতা: ইউরোপীয় শেয়ারবাজার দুই সপ্তাহের সর্বনিম্ন স্তরে নেমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন।
ইকুইটি মূল্যায়ন নিয়ে উদ্বেগ: বিশ্বব্যাপী ইক্যুইটি বাজারের বর্তমান মূল্যায়ন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ডলারের দরপতন: তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর পর ডলারের সূচক কিছুটা কমলে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ে।
৪. ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ
স্বর্ণের দাম ২ লাখ টাকার ঘর অতিক্রম করায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য স্বর্ণকে এখনো নিরাপদ মনে করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজুস নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে হলমার্ক দেখে স্বর্ণ কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
