ক্রিকেটারদের জীবনে একাদশের বাইরে বসে থাকা সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি। বিশেষ করে যখন আপনি দলের অন্যতম বড় তারকা, তখন সেই সময়টা আরও বেশি মানসিক চাপের। আইএল টি-টোয়েন্টিতে ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে। টানা চার ম্যাচ দলে সুযোগ না পাওয়া একজন ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাসে বড় আঘাত হতে পারে। কিন্তু সাকিব দেখালেন, অভিজ্ঞতা আর মানসিক শক্তি থাকলে প্রত্যাবর্তন শুধু সম্ভবই নয়, বরং আরও শক্তিশালী হয়।
ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল চলতি আসরে সাকিবের মাত্র তৃতীয় ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচে খুব বেশি সুযোগ না পেলেও এবার তিনি পুরো ম্যাচেই নিজের প্রভাব ছড়িয়ে দেন। বল হাতে শুরুতেই প্রতিপক্ষের পরিকল্পনায় ভাঙন ধরান। ফখর জামান ও স্যাম কারানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে ভাইপার্সকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন তিনি।
এই ম্যাচে সবচেয়ে লক্ষণীয় ছিল সাকিবের লাইন-লেংথ ও গতি নিয়ন্ত্রণ। উইকেট যে স্পিন সহায়ক, সেটা খুব দ্রুতই বুঝে নেন তিনি। অযথা আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে রান বিলানোর বদলে তিনি বেছে নেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। এর ফলও হাতেনাতে পাওয়া যায়।
ব্যাটিংয়ে নেমেও তিনি একই রকম পরিণত মানসিকতার পরিচয় দেন। ছোট লক্ষ্য হলেও উইকেটের কারণে দ্রুত রান তোলা সহজ ছিল না। দলের অনেক হার্ড-হিটার থাকা সত্ত্বেও সাকিব নিজে ঝুঁকি না নিয়ে একপ্রান্ত ধরে রাখেন। এই দায়িত্বশীল ইনিংসই এমআই এমিরেটসকে নিশ্চিত জয়ের পথে রাখে।
অনেকে তার স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ম্যাচের বাস্তবতায় এই ইনিংস ছিল নিখুঁত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যে শুধু দ্রুত রান তোলার খেলা নয়, বরং পরিস্থিতি বোঝার খেলাও—এই ম্যাচে সেটাই প্রমাণ করেছেন সাকিব।
এই ম্যাচসেরার পুরস্কার সাকিবের ব্যক্তিগত অর্জনের ঝুলিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। তবে তার চেয়েও বড় বিষয়, তিনি আবারও দেখিয়ে দিলেন কেন তাকে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার বলা হয়।
