কেন ঢাকার দলে দেশি কোচিং স্টাফই বেশি? পেছনের ভাবনা ও কৌশল

আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সামনে রেখে প্রস্তুতি জোরদার করেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। অনুশীলন, দল গঠন ও কৌশল নির্ধারণ—সব কিছুতেই এখন ব্যস্ত সময় পার করছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তবে এবারের ঢাকার দল নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে তাদের কোচিং কাঠামো। অন্যান্য দলের তুলনায় ঢাকা ক্যাপিটালসে বিদেশি কোচের সংখ্যা কম, বরং দেশি কোচিং স্টাফদের উপস্থিতিই বেশি চোখে পড়ছে।

দলের প্রধান কোচ হিসেবে আছেন ইংল্যান্ডের টবি র‍্যাডফোর্ড, যিনি একমাত্র বিদেশি কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাইরে সহকারী কোচ, ফিজিও, ট্রেইনার ও অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফ—প্রায় সবাই বাংলাদেশি। এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে নেওয়া এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদি ভাবনা।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সহকারী কোচ মাহবুব আলি জ্যাকি জানান, ঢাকা ক্যাপিটালস শুরু থেকেই দেশি কোচদের ওপর আস্থা রেখেছে। তিনি বলেন, “প্রধান কোচ হিসেবে টবি র‍্যাডফোর্ড থাকছেন। বিশ্লেষণের কাজে প্রয়োজনে এক-দুজন বাইরের বিশেষজ্ঞ যুক্ত হতে পারেন। তবে মূল কোচিং ইউনিটে আমরা দেশি ফিজিও ও ট্রেইনারদেরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।”

জ্যাকির মতে, দেশি ফিজিও ও ট্রেইনাররা স্থানীয় খেলোয়াড়দের শারীরিক গঠন, ফিটনেস চাহিদা ও মানসিক প্রস্তুতির বিষয়ে সবচেয়ে ভালো ধারণা রাখেন। তিনি বলেন, “ফিজিও ও ট্রেইনাররাই খেলোয়াড়দের শরীরের অবস্থা সবচেয়ে কাছ থেকে বোঝেন। কোন খেলোয়াড় কখন বিশ্রাম চাইছে বা কখন বাড়তি চাপ নিতে পারবে—এই সিদ্ধান্তগুলোতে তাদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও যোগ করেন, দেশি কোচিং স্টাফদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও কম নয়। বিভিন্ন টুর্নামেন্ট, জাতীয় দল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কাজ করে তারা নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। ফলে স্থানীয় কোচদের সুযোগ দিলে যেমন দলের কাজ সহজ হয়, তেমনি বাংলাদেশের কোচিং কাঠামোরও আন্তর্জাতিক মানে উন্নয়ন ঘটে।

ঢাকা ক্যাপিটালসের কৌশলগত প্রস্তুতিও বেশ সুসংগঠিত বলে জানান জ্যাকি। প্রতিটি ম্যাচের জন্য একাধিক গেম প্ল্যান তৈরি রাখা হয়। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সাধারণত দুই থেকে তিনটি গেম প্ল্যান প্রস্তুত রাখি। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী অধিনায়ক ও কোচিং স্টাফ একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।”

খেলার সময় পরিস্থিতি বদলালে মাঠে খেলোয়াড়দের অবস্থানেও পরিবর্তন আনা হয় বলে জানান তিনি। উইকেট, প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা ও ম্যাচের গতি—সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই এই পরিবর্তনগুলো করা হয়।

সব মিলিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচিং কাঠামো শুধু চলতি বিপিএলের কথা মাথায় রেখে নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে দেশি কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদের দক্ষতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচিং স্টাফ কাঠামো (সংক্ষেপে)

দায়িত্বনামজাতীয়তা
প্রধান কোচটবি র‍্যাডফোর্ডবিদেশি
সহকারী কোচমাহবুব আলি জ্যাকিবাংলাদেশ
ফিজিও ও ট্রেইনারবিভিন্নবাংলাদেশ
বিশ্লেষকপ্রয়োজনে যুক্তবিদেশি/স্থানীয়