বিশ্বব্যাপী মূল্যবান বীমা বাজার আগামী দশকে দ্রুত বৃদ্ধির দিকে এগোতে চলেছে। Allied Market Research-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে এই বাজারের মোট মূল্য ছিল প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩৪ সালের মধ্যে প্রায় ৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। অর্থাৎ, আগামী দশ বছরে এই বাজারের বার্ষিক যৌগিক বৃদ্ধির হার (CAGR) প্রায় ৬.৬% থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজার বৃদ্ধির পেছনে মূলত ভোক্তাদের মধ্যে সম্পদ সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতার বাড়তি প্রবণতা কাজ করছে। মানুষ কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য নয়, বরং তাদের মূল্যবান সম্পদ, গহনা, শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য বিলাসবহুল আইটেম নিরাপদ রাখার জন্য বীমার দিকে ঝুঁকছে। নগদ আয় বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চাহিদা আরও দৃঢ় হচ্ছে।
তবে বাজার সম্প্রসারণে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনেক দেশে এখনও সম্পূর্ণ বীমা গ্রহণ করা হয়নি, উদীয়মান বাজারে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা যায়, এবং উচ্চমূল্যের সম্পদের যথাযথ মূল্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া। এসব কারণে বাজারের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে কিছু সময় লাগতে পারে।
অন্যদিকে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এই খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। ডিজিটাল আন্ডাররাইটিং প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, সম্পদের নিরাপদ যাচাইয়ের জন্য ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং অনলাইন বীমা প্ল্যাটফর্মের বিস্তার বাজার সম্প্রসারণকে আরও ত্বরান্বিত করছে।
বিশেষভাবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, যেমন ভারত ও চীন, উদীয়মান বাজার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই অঞ্চলে উচ্চমূল্যের সম্পদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিলাসবহুল পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং সরকারিভাবে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি উদ্যোগ বীমা গ্রহণকে উৎসাহিত করছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি সচেতনতা বাড়ে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন অব্যাহত থাকে, তবে মূল্যবান বীমা বাজার আগামী দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারিত হবে। আজকের দিনে মূল্যবান বীমা কেবল বিলাসবহুল বিকল্প নয়, বরং ব্যক্তিগত ও আর্থিক সুরক্ষার অপরিহার্য হাতিয়ার হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। এই প্রবণতা ভবিষ্যতে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হবে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ভোক্তাদের সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।