বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত রিপোর্টিং ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর, স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিক করার লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত ও তথ্যসমৃদ্ধ কর্মশালার আয়োজন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম (ওআইএমএস) এবং অনলাইন এক্সপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম (ওইএমএস)–এর আওতায় আয়োজিত এই কর্মশালার মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমে সঠিক তথ্য প্রদান, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা প্রতিপালনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রবিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে রাজধানী ঢাকার এনআরবিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ট্রেনিং ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (এইচআরটিডিসি) দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (এমডি ও সিইও) ড. মো. তৌহিদুল আলম খান। তিনি তাঁর বক্তব্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যক্রমে সময়োপযোগী, নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
কর্মশালার কারিগরি ও প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা কার্যক্রম বিভাগ (এফইওডি)–এর উপপরিচালক লায়লা আক্তার এবং সহকারী পরিচালক তাসফিয়া তানজিম স্নিগ্ধা। তারা ওআইএমএস ও ওইএমএস ব্যবস্থার ব্যবহারিক দিক, রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুল, তথ্য হালনাগাদে বিলম্বের ঝুঁকি এবং তা থেকে উদ্ভূত আর্থিক ও আইনি জটিলতা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক জারিকৃত সার্কুলার, নীতিমালা ও নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রিপোর্টিং নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
কর্মশালায় এনআরবিসি ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডিভিশনের প্রধান হাসনাত রেজা মাহিব্বুল আলমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন। পাশাপাশি আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি কর্মশালাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা, সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সরাসরি দিকনির্দেশনা পান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. তৌহিদুল আলম খান বলেন, অনলাইন মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে সঠিক রিপোর্টিং নিশ্চিত করা গেলে আমদানিকৃত পণ্যের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ সহজ হয় এবং রপ্তানি আয়ের সময়মতো প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়। তিনি উল্লেখ করেন, অতিমূল্যায়ন ও নিম্নমূল্যায়নের মতো অনিয়ম বন্ধে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে, যা অর্থপাচার প্রতিরোধে সহায়ক। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নথিপত্র ব্যবস্থাপনাকে সহজ করে, সময় ও ব্যয় সাশ্রয় করে এবং গ্রাহকসেবার মান উন্নত করে। এজন্য তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদেরও নিয়মিতভাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
প্রশ্নোত্তর ও মতবিনিময় পর্বের মাধ্যমে কর্মশালার সমাপ্তি ঘটে। এই আয়োজনের মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক প্রমাণ করেছে যে, দক্ষতা উন্নয়ন, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্য অর্থায়নে টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করা সম্ভব।
কর্মশালার সংক্ষিপ্ত তথ্য
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| আয়োজক | এনআরবিসি ব্যাংক |
| তারিখ | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ |
| স্থান | এইচআরটিডিসি, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা |
| প্রধান অতিথি | ড. মো. তৌহিদুল আলম খান, এমডি ও সিইও |
| প্রশিক্ষক | লায়লা আক্তার, তাসফিয়া তানজিম স্নিগ্ধা (বাংলাদেশ ব্যাংক) |
| মূল আলোচ্য বিষয় | ওআইএমএস, ওইএমএস, বৈদেশিক মুদ্রা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রক সম্মতি, বাণিজ্য স্বচ্ছতা |
এই কর্মশালা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা জোরদারে এনআরবিসি ব্যাংকের সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকার একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত।
