ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সম্প্রতি প্রায় ১০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে স্থায়ীভাবে অস্ত্র সরবরাহ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নেওয়া হয়েছে, যখন গাজায় সংঘটিত হঠাৎ হামলার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি সেনাদের প্রস্তুতি ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছিল। স্থানীয় দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো ‘ডিভিশন ডেভিড’ (৯৬) ইউনিট।
ডিভিশন ডেভিড মূলত এমন রিজার্ভ সেনাদের নিয়ে গঠিত, যারা বয়সে তুলনামূলকভাবে বেশি, প্রায় ৪০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, এবং যাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় তাদের রিজার্ভ দায়িত্ব শেষ হওয়ার পরেও পুনরায় দায়িত্বে ফেরার ইচ্ছা রাখেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই সেনাদের এম৪ বা উন্নত এম১৬ রাইফেল, ম্যাগাজিন, কমব্যাট ভেস্ট এবং হেলমেট সরবরাহ করা হবে। এসব সরঞ্জাম সরাসরি তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে তারা দ্রুত তাদের ব্যাটালিয়ন এলাকায় যোগ দিতে পারেন।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রাইফেলগুলো সারা বছর বাড়িতেই রাখা হবে এবং বড় আকারের সেফে নিরাপদে সংরক্ষণ করা হবে। যদিও রিজার্ভ সেনারা বছরে মাত্র কয়েক সপ্তাহই ইউনিফর্ম পরবেন, তবুও বাকি সময় তারা বেসামরিক নাগরিক হলেও অস্ত্রগুলো তাদের ব্যক্তিগত হেফাজতে থাকবে। এটি মূলত নীতিগত একটি বড় পরিবর্তন, যা পূর্বে ছিল অনুমোদিত নয়।
ইসরায়েলের মোট রিজার্ভ সেনার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ, এবং সামরিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা সংঘাতের ফলে ৯২৩ জন কর্মকর্তা ও সেনা নিহত হয়েছেন। তাছাড়া, একই সংঘাতে প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ।
সেনাবাহিনী এই নতুন পদক্ষেপকে জরুরি প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতি ও ভবিষ্যতের প্রস্তুতি কৌশলের একটি বড় পরিবর্তনকে নির্দেশ করছে।
