ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদি ঢামেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হন এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদ হাসান।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত ঢামেক কর্তৃপক্ষ হাদির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য প্রকাশ না করলেও ডা. জাহিদ তার সংকটাপন্ন অবস্থার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, হাসপাতালে আনার সময় হাদির ‘সাইন অফ লাইফ’ ছিল। এনেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সময় তার নিজস্ব শ্বাসপ্রশ্বাস বজায় রাখার প্রচেষ্টা দেখা গেছে, যা রোগীর জীবনীশক্তির উপস্থিতিকে নির্দেশ করে।
ডা. জাহিদ বলেন, ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর এবং সম্পূর্ণ ক্রিটিক্যাল। অস্ত্রোপচার চলাকালে দুইবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়া ছাড়াও নাক ও মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, রোগী সম্পর্কে কোনো আশার কথা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। এখন তিনি বেঁচে আছেন, তবে তার জীবন রক্ষা সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসা সহায়তা এবং আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।
তিনি আরও জানান, হাদির পরিবার উন্নত আইসিইউ সুবিধার কথা বিবেচনা করে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসকরাও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন, কারণ হাদির জীবনরক্ষাকারী সাপোর্ট আরও জোরদারভাবে প্রয়োজন।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শুক্রবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন ব্যক্তি ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। নিরাপত্তা ও তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
ডিএমপি জানায়, থানা পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। হামলায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ চলছে। পাশাপাশি, হামলাকারীদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করতে বা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করতে নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গুরুতর আহত হয়ে হাদির জীবন সংকটে পড়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। চিকিৎসক, পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একযোগে তাঁর সুরক্ষা, চিকিৎসা এবং ঘটনার তদন্তে কাজ করছে। পুরো পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, এবং পরবর্তী যেকোনো সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।
সূত্র/বিবিসি
