অস্ট্রেলিয়ার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন বিনিয়োগ বাড়ানোর জরুরি আহ্বান

অস্ট্রেলিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। দেশটির বর্তমান অভিযোজন বিনিয়োগ এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয় বলে অ্যাকচুয়ারিজ ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, যদি বিনিয়োগের ঘাটতি অব্যাহত থাকে, তবে আগামী কয়েক দশকে জলবায়ু সংক্রান্ত ক্ষতি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে প্রায় ৩৮ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ক্ষতি করছে। ২০৬০ সালের মধ্যে এই ক্ষতি প্রায় ৭৩ বিলিয়নে পৌঁছতে পারে। ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়, ব্যাপক বন্যা, দাবানল এবং ঝড়ো হাওয়ার কারণে দেশের অবকাঠামো, বাসস্থান, কৃষি ও ব্যবসা খাতে দীর্ঘমেয়াদি চাপ তৈরি হচ্ছে।

প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী অভিযোজন বিনিয়োগের ঘাটতির মূল কারণ হলো নীতিগত দুর্বলতা এবং ঝুঁকি-ভিত্তিক পরিকল্পনার অভাব। প্রচলিত ব্যয়-সাপেক্ষ বিশ্লেষণ দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হ্রাসের প্রকৃত প্রভাব বিবেচনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় উপকূল রক্ষা, বন্যা প্রতিরক্ষা, অগ্নিনিরাপত্তা এবং ঝুঁকিপ্রবণ এলাকার পুনর্গঠন প্রকল্প পিছিয়ে পড়েছে।

বীমা খাতও এই ঘাটতির প্রভাব ভোগ করছে। ঝুঁকি বাড়ার কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে বীমা প্রিমিয়াম দ্রুত বাড়ছে এবং কিছু ক্ষেত্রে বীমা পাওয়াও কঠিন হয়ে গেছে। ইনস্টিটিউটের মতে, যদি অভিযোজন বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পায়, তবে বীমা বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে অর্থনীতির অন্যান্য খাতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রধান লেখক রমোনা মাইরি বলেন, অভিযোজন বিনিয়োগ এখনই করা উচিত, এটি ভবিষ্যতের খরচ কমানোর এক অপরিহার্য হাতিয়ার। পাশাপাশি, ন্যাশনাল ক্লাইমেট রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানকে বাস্তব পদক্ষেপে রূপান্তর করা দরকার। রাজনৈতিক সদিচ্ছা, অর্থনৈতিক দূরদৃষ্টি এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।

এজে