চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সড়ক সংস্কারের কার্যক্রমের কথা বলে শঙ্খ নদী থেকে অনুমতি ছাড়া ব্যাপক বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই বালুর বড় অংশ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নদীভাঙন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আরও তীব্র হচ্ছে।
এলজিইডি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শাহ মোহছেন আউলিয়া সড়কের বটতলী রুস্তমহাট বাজার থেকে রায়পুর ইউনিয়নের ওয়াহেদ আলী বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ২৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কাজটি পায় ইয়াকুব অ্যান্ড ব্রাদার্স, তবে মূল ঠিকাদার প্রকৌশলী হাবিব উল্লাহসহ কয়েকজনের কাছে সাব কন্ট্রাক্ট দেন। বর্তমানে তারা মাঠপর্যায়ে কাজ পরিচালনা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শঙ্খ নদীর ভাঙনপ্রবণ কিছু অংশ থেকে নিয়মিত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সাব ঠিকাদার দাবি করেন, তারা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সড়ক সংস্কারের জন্য বালু সংগ্রহ করছেন। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বাইন্নার দীঘি এলাকায় প্রতিদিন যত বালু তোলা হচ্ছে, তার অনেকটাই ব্যক্তিগত ক্রেতাদের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় শাহাব উদ্দিন বলেন, নদীর ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় প্রতিদিন বালু তোলা হচ্ছে। এভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে নদীপাড়ে স্থাপিত ব্লক ও বাঁধ ভেঙে পড়তে পারে। কামাল উদ্দিন জানান, তিনি নিজের জমি ভরাট করতে ৫০ ট্রাক বালু কিনেছেন ঠিকাদারের লোকজনের কাছ থেকে, প্রতিট্রাকের মূল্য ১৩৫০ টাকা।
এই প্রতিবেদক ক্রেতা পরিচয়ে বালু মহলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ছৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সাইট থেকে ২.৫ কিলোমিটার দূরত্বে প্রতিট্রাক বালুর দাম ১৪০০ টাকা।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘আমরা বাইরে থেকে আনা বালু সড়ক সংস্কারে ব্যবহার করছি, বালু বিক্রি করছি না।’ তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বর্ণ হক বলেন, নদীর ঝুঁকিপূর্ণ অংশ থেকে বালু তোলা হলে বাঁধের স্থায়িত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী জানান, ‘কাজটি সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করছে, তবে বালুর উৎস সম্পর্কে আমার জানা নেই।’ আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘কোনো ঠিকাদারকে নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
টিএসএন
