শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বড় ইস্যু হয়ে উঠছে: রনি

সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ যেভাবে বাড়ছে এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা যেভাবে জটিল আকার ধারণ করছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায়—এই ইস্যু এখানেই থেমে থাকবে না, বরং আরও বহু দূর গড়াবে।

সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক বিশ্লেষণে তিনি এসব কথা বলেন। রনি বলেন, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে ‘রয়্যাল গেস্ট’ হিসেবে অবস্থান করছেন। সেখানে তাকে বিশেষ নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক যোগাযোগের পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে অবস্থান করেই তিনি নিয়মিত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছেন এবং দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনাকে ঘিরে আলাদা একটি সচিবালয় গঠন করা হয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনৈতিক বাস্তবতা বোঝেন—এমন অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এই কাঠামো থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার অবস্থান ও বক্তব্য সমন্বিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গোলাম মাওলা রনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিচার ও রায় হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার মামলার মতো কোনো বিচার এতটা আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আগে আসেনি। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদাহরণ টেনে বলেন, সে সময় দীর্ঘদিন ধরে খোলামেলা বিচার প্রক্রিয়া চলায় বিশ্বব্যাপী নিয়মিত আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার বিচার সেই তুলনায় আরও গভীর ও বিস্তৃত আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করছে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ দিনে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ঘিরে যে আলোচনা হয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্য কোনো বাংলাদেশি নেতার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। বিশ্ব গণমাধ্যম অনেক সময় অর্থের বিনিময়ে কাজ করলেও শুধু অর্থ দিয়ে এমন বিস্তৃত ও প্রভাবশালী প্রচার সম্ভব নয়। অতীতে জামায়াত বা বিএনপি বিশ্ব গণমাধ্যমের নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র ১৪ মাসের মধ্যে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন। আলজাজিরা ও বিবিসির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এসব গণমাধ্যম অতীতে শেখ হাসিনার সমালোচনামুখর হলেও বর্তমানে তার সাক্ষাৎকার প্রচার করছে।

তার মতে, এর অর্থ হলো—শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক দক্ষতা, কৌশল ও দলীয় সক্ষমতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে পেরেছেন, অথবা বিশ্ব সম্প্রদায় কোনো কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনাকে একে অপরের জন্য অপরিহার্য মনে করছে।

জিলাইভ/টিএসএন