২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের’ প্রথম বর্ষ স্নাতক (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট) প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা আজ শনিবার সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলা এই পরীক্ষায় মাত্র ১,০৫০টি আসনের বিপরীতে অংশ নেয় ৩৪ হাজার ৬২ জন শিক্ষার্থী, যা প্রতি আসনে প্রায় ৩৩ জন করে প্রতিযোগী দাঁড় করিয়েছে। দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় এটি নিঃসন্দেহে অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত।
পরীক্ষা চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পরীক্ষাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন ভবন পরিদর্শন করেন। তাঁর সাথে ছিলেন সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহমুদ ওসমান ইমাম এবং প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ।
তাঁদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক তদারকি নিশ্চিত করে।
ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্র ছাড়াও পরীক্ষাটি ঢাকার বাইরে চারটি বিভাগীয় শহর—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর—এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায় সকাল থেকেই।
পরিদর্শন শেষে উপাচার্য জানান, পরীক্ষার পুরো সময়জুড়ে কোনো অস্বাভাবিকতা ঘটেনি। তিনি বলেন, “একটি আসনের জন্য প্রায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতা করছে—এটি অত্যন্ত কঠিন একটি লড়াই। তবে সবাই মনোযোগী ছিল এবং পরিবেশ ছিল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের প্রতি অযথা মানসিক চাপ না দেওয়া। তাঁর ভাষায়, “ভর্তি হতে না পারলে জীবনের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়—এই ধারণা ভুল। প্রতিটি শিক্ষার্থীই নিজের জায়গায় সক্ষম, আর সে সক্ষমতাকে বিকশিত হতে দিতে হবে।”
এই ইউনিটে ১,০৫০টি আসনের মধ্যে বিভাগভেদে বরাদ্দ করা আছে—ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য ৯৩০টি, বিজ্ঞান শাখার জন্য ৯৫টি এবং মানবিক শাখার জন্য ২৫টি আসন।
এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৫ হাজার ১৪৮ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৫ হাজার ৮৯২ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ২৩ হাজার ২২ জন আবেদন করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অনেকে বলেছেন, প্রশ্ন ছিল মানসম্মত এবং সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতাই এখানে বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকেই পরীক্ষা শেষে ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার আগে ভবিষ্যতের স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা জানান।
এ বছরের পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনা, উপস্থিতি, এবং প্রশাসনের সক্রিয় তদারকির ফলে সবাই পরীক্ষার অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। ভর্তি পরীক্ষায় সফলতার অপেক্ষায় এখন হাজারো শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
