শীতের তীব্রতায় ডাকাতির ঊর্ধ্বগতি, বাড়ছে জনভয়

আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতের তীব্রতার মধ্যেই ডাকাতির ঘটনা তীব্রভাবে বেড়ে চলেছে। মাত্র এক সপ্তাহে পাঁচটি বড় ধরনের ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাত দলগুলো বসতবাড়িতে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করছে। বাধা দিতে গিয়ে অনেক গ্রামীণ বাসিন্দা মারধরের শিকার হচ্ছেন। আতঙ্কে পড়ে নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য গ্রামবাসীরা পালা করে পাহারা দিচ্ছেন।

সর্বশেষ রোববার রাত আড়াইটার দিকে উচিৎপুরা ইউনিয়নের ভৈরবদী এলাকায় ২০-২৫ জনের একটি ডাকাত দল রাজন রায়ের বাড়িতে প্রবেশ করে। কলাপসিবল গেট ভেঙে তারা পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৬০ হাজার টাকা, সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার, পাঁচ ভরি রুপা ও মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। পরবর্তীতে দয়াল রায়ের বাড়িতেও একইভাবে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের ও প্রতিবেশীদের কুপিয়ে জখম করে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

একদিন আগে শনিবার রাত ১২টার দিকে খাগকান্দা ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় গ্রামীণ টেক্সটাইল শ্রমিকরা ডাকাত দলের কবলে পড়েন। ১০-১২ জনের মুখোশধারী দল তাদের মোবাইল ও নগদ টাকা লুট করে। শ্রমিকরা জানান, প্রাণের ভয় দেখিয়ে ডাকাতরা বড় বড় দা উঁচিয়ে টাকা ও মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নেন।

১৬ ডিসেম্বর রাতে মাহমুদপুর ইউনিয়নের খিরদাসাদী এলাকায় ১৫-২০ সদস্যের একটি ডাকাত দল ব্যবসায়ী আব্দুর রব মিয়ার বাড়িতে ঢুকে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, সাত লাখ ২০ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালপত্র লুট করে। এই সময় ব্যবসায়ী ও তাঁর শ্রমিক কুপিয়ে জখম হন। আহত শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ডাকাতির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিম্নে সংক্ষেপে দেওয়া হলো:

তারিখএলাকাডাকাতের সংখ্যালুটপাটের মূলপত্রআহতরা
১৬ ডিসেম্বরখিরদাসাদী, মাহমুদপুর১৫-২০১০ ভরি স্বর্ণ, ৭,২০,০০০ টাকা২ জন
২২ ডিসেম্বরকদমতলী, খাগকান্দা১০-১২মোবাইল, নগদ টাকা
২২ ডিসেম্বরভৈরবদী, উচিৎপুরা২০-২৫৬.৫ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৬০,০০০ টাকা৪ জন

আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, সুজন মিয়া নামে এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি। পুলিশ ডাকাতদের গ্রেপ্তারে তৎপর ও টহল জোরদার করছে। শীতকালকে সুযোগ মনে করে ডাকাতরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাই স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।