বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) দেশের শিল্প খাতের জন্য মূলধন পণ্যের আমদানিকে আরও সহজ, দ্রুত এবং সুবিধাজনক করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিল্প বিনিয়োগকারীরা তিন বছরের ইউসেন্স সুবিধার আওতায় মূলধন পণ্য ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুযোগ পাবেন। এর জন্য পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন নেই, বিশেষ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না।
এর আগে এই সুবিধা সীমিত ছিল শুধুমাত্র উৎপাদন সংক্রান্ত মূলধন যন্ত্রপাতির জন্য। তবে নতুন নির্দেশনার ফলে শিল্পীরা যেকোনো ধরনের মূলধন যন্ত্রপাতি, উৎপাদন সরঞ্জাম এবং অন্যান্য পণ্য একই তিন বছরের মেয়াদে আমদানি করতে পারবে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, “এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হল শিল্প খাতের দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং মূলধন পণ্য আমদানি প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুততর করা।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০ ডিসেম্বর একটি পরিপত্র জারি করে নতুন নির্দেশনা কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি বিডার ১৮৬তম বৈদেশিক ঋণ ও সরবরাহকারীর ক্রেডিট সম্পর্কিত পরিদর্শন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গৃহীত, যার সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের গভর্নর।
এক সিনিয়র কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন নিয়মের ফলে কোম্পানিগুলি সহজেই তাদের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম যেমন এয়ার কন্ডিশনার, ভেন্টিলেশন সিস্টেম, উৎপাদন মেশিন এবং অন্যান্য শিল্প সরঞ্জাম আমদানি করতে পারবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি শিল্পখাতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও উৎপাদন ক্ষমতা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে আনবে এবং তিন বছরের ইউসেন্স সুবিধা নিশ্চিত করে শিপিং, যন্ত্রপাতি ও মূলধন পণ্যের আমদানিকে আরও কার্যকর করবে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, নতুন নীতি শিল্প খাতে নতুন বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করবে এবং উৎপাদনশীল খাতগুলিতে সক্ষমতা সম্প্রসারণকে ত্বরান্বিত করবে।
বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী, নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে দেশের শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটি স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্প উন্নয়ন এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।