শরীয়তপুর সদর উপজেলার চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জেলা ছাত্রদলের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ এবং দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার হয়, যার ফলে উভয়পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছাত্রদল কর্মী নাঈমকে (২৫) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহতদের তালিকা নিম্নরূপ:
| নাম | বয়স | দল | অবস্থা |
|---|---|---|---|
| নাঈম | ২৫ | ছাত্রদল | আশঙ্কাজনক, ঢাকায় চিকিৎসা |
| আশিক | ২৪ | ছাত্রদল | হালকা আহত |
| নিরব | ১৯ | ছাত্রদল | হালকা আহত |
| আরমান দর্জি | ২৬ | ছাত্রদল | হালকা আহত |
| ইসহাক সরদার | ৩৪ | ছাত্রদল | হালকা আহত |
| আবিদ খান | ২৮ | এনসিপি | হালকা আহত |
| মামুন মাঝি | ৩০ | এনসিপি | হালকা আহত |
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল চলাকালীন একটি মোটরসাইকেল মিছিলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এ ঘটনার সূত্র ধরে ছাত্রদল ও এনসিপির নেতাকর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালীন কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে উভয়পক্ষের আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এনসিপির বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে চৌরঙ্গী মোড় পর্যন্ত করা হয়েছিল। মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির হত্যার প্রতিবাদ এবং খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতা মোতালেব শিকদারের ওপর গুলির ঘটনা নিয়ে দোষীদের বিচারের দাবি।
ঘটনার পর দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহেল তালুকদার বলেন, “ছাত্রদলের এক কর্মীকে বাধা দেওয়া হয়। আমরা ঘটনাস্থলে গেলে এনসিপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ককটেল বিস্ফোরণ ও কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
অন্যদিকে এনসিপির সাবেক যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার অভিযোগ করেন, “ছাত্রদলের এক কর্মী মিছিলের মধ্যে ঢুকে হামলা চালায়। পরে তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল দেখা যায়। আমরা শিক্ষার্থী, ককটেল কোথা থেকে পাবে—এটি অবাস্তব।”
সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক সরদার বলেন, “আমরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য গিয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের ওপর হামলা করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই পূর্বে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।”
শরীয়তপুর জেলা শাখার সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আমিনুল মোহাম্মদ জিতু বলেন, “উভয়পক্ষই অতীতে একসঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। স্থানীয়ভাবে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।”
এ সংঘর্ষ এলাকায় সাধারণ জনগণ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, তবে লিখিত অভিযোগ এখনো দায়ের হয়নি।
