মহাদেশজুড়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং বিপ্লবে নেতৃত্ব—ডিবিএস পেল এশিয়া ব্যাংক অব দ্য ইয়ার ২০২৫

এশিয়ার ব্যাংকিং খাতে প্রতিযোগিতা দিনদিন তীব্রতর হচ্ছে। প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, গ্রাহকসেবা এবং দ্রুত আর্থিক সমাধান—সব মিলিয়েই আজকের ব্যাংকিং শিল্প এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। এই অত্যাধুনিক ব্যাংকিং প্রতিযোগিতায় ২০২৫ সালের জন্য এশিয়া ব্যাংক অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতে আবারও শীর্ষস্থান দখল করেছে ডিবিএস ব্যাংক।

দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রকাশনা দ্য ব্যাংকার প্রতিবছর এই পুরস্কার ঘোষণা করে। ১৯টি দেশের ব্যাংকগুলোকে ছাড়িয়ে ডিবিএস যেভাবে শীর্ষে উঠেছে, তা প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক উদ্ভাবনী মনোভাব ও ডিজিটাল শক্তিমত্তার বাস্তব প্রমাণ।

এশিয়ার নানা দেশে—বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ উদীয়মান অর্থনীতিতে—ডিবিএস নিজস্ব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকর্ষণ করছে। তাদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ, ডিজিটাল ওয়ালেট, রিয়েল–টাইম পেমেন্ট সিস্টেম, স্মার্ট কন্ট্রাক্ট, এআই–চালিত প্রতারণা প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং গ্রাহকবান্ধব অনলাইন পরিষেবা এশিয়ার পৃথক দেশগুলোর ব্যাংকের তুলনায় তাদের আরও এগিয়ে দিয়েছে।

দ্য ব্যাংকার–এর বিচারক কমিটির মতে, ডিবিএস শুধু প্রযুক্তিগত উন্নয়নেই নয়, বরং তা মানুষের দৈনন্দিন আর্থিক জীবনকে সহজ করতে ব্যবহারে বিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—ডিবিএসের এআই–ভিত্তিক প্রতারণা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, যা সিঙ্গাপুরে বাড়তে থাকা ডিজিটাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে ব্যাংকটি কর্মীদের প্রযুক্তি–শিক্ষা, পুনঃপ্রশিক্ষণ এবং গ্রাহকসেবা উন্নয়নে অধিক বিনিয়োগ করছে।

ডিবিএসের সিইও তান সু শান বলেন, “এশিয়া আজ বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু। এখানে ব্যবসায়িক সুযোগ যেমন বাড়ছে, তেমনি গ্রাহকের প্রয়োজনও দ্রুত পাল্টাচ্ছে। তাই আমরা নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে সবসময় এগিয়ে থাকতে চাই। সেবা সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য।”

তবে ডিবিএস শুধু প্রযুক্তি প্রয়োগেই থেমে নেই। টেকসই ব্যাংকিং, পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ, সামাজিক উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং সুবিধাবঞ্চিতদের আর্থিক ক্ষমতায়ন—এসবখেত্রেও তারা অগ্রগতি দেখিয়েছে। তাদের ডিবিএস ফাউন্ডেশন বহু দেশেই সামাজিক উদ্ভাবনী প্রকল্পকে সমর্থন দিচ্ছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, ডিবিএসের শক্তি দুটি—
১. মজবুত আর্থিক ভিত্তি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
২. ডিজিটাল–নির্ভর উদ্ভাবনী ব্যাংকিং ইকোসিস্টেম

এই সমন্বয়ই ব্যাংকটিকে শুধু এশিয়াতেই নয়, বৈশ্বিক পর্যায়েও আলাদা অবস্থান এনে দিয়েছে।

এশিয়ার শত শত প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে ডিবিএসের এই বিজয় দেখায়—ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ যেখানে দ্রুত বদলে যাচ্ছে, সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে একটি এশীয় প্রতিষ্ঠান। উদ্ভাবন, নিরাপত্তা ও গ্রাহকসেবার অনন্য মিশেলই ডিবিএসকে আবারও শীর্ষে তুলেছে।