চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, তার রেশ কাটতে না কাটতেই পুলিশ বক্স ও ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাকিল আহমেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় মানুষ ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ গণমাধ্যকে জানান, হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও现场ে সংগৃহীত ভিডিও বিশ্লেষণ করে হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “যারা জড়িত, ভিডিও ও তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এদিকে সদর থানার ওসি নূরে আলম বলেন, শুক্রবার সংঘটিত হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। এজাহারে নামীয় ও অজ্ঞাত মিলিয়ে মোট ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি জানান, হামলা পরিকল্পিত ছিল কি না—তা তদন্তে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ঘটনার পটভূমি
শুক্রবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সার্কিট হাউস মোড় এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট এড়িয়ে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে দুর্ঘটনায় নিহত হন রিফাত আলী ও সোহাগ আহমেদ নামের দুই যুবক। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা দাবি করেন—পুলিশের তাড়ার কারণেই মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে পুলিশি তৎপরতার বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে প্রতিবাদকারীরা পুলিশ বক্স ও ফাঁড়িতে হামলা চালায়। ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এসব স্থাপনায়।
রাতে সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সড়ক থেকে বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপটে এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে পুনরায় কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়।
মামলার মূল তথ্য
| বিষয় | তথ্য |
|---|---|
| দায়েরকারী | এসআই শাকিল আহমেদ |
| গ্রেপ্তার | ৯ জন |
| মোট আসামি | ৩০০ জন (নামীয় + অজ্ঞাত) |
| মামলা | সন্ত্রাসবিরোধী আইনে |
| অভিযোগ | হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ |
| নিয়ন্ত্রণে আনে | সেনাবাহিনী ও বিজিবি |
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক—এটাই তাদের প্রত্যাশা।
