বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ৬ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ

বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নিলামের মাধ্যমে ৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ৬০ মিলিয়ন বা ৬ কোটি মার্কিন ডলার ক্রয় করেছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ক্রয়ের সময় ডলারের বিনিময় হার নির্ধারিত হয়েছিল ১২২.৩০ টাকা প্রতি ডলার।

তিনি আরও জানান, এ ক্রয়ের মাধ্যমে চলতি ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোট ৮০৫.৫০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নিলামের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিক দফায় ডলার ক্রয় করেছে। এখন পর্যন্ত মোট ক্রয় ২.৯৩ বিলিয়ন বা ২৯৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার পৌঁছেছে।

কেন ডলার কেনা হচ্ছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ধরনের নিলাম কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে স্থিতিশীল রাখা, রিজার্ভ শক্তিশালী করা এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ডলারের সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিশেষ করে আমদানি-রফতানি, সরকারি খাত এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিলামের মাধ্যমে ডলারের চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়। এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকারীদের জন্য স্থিতিশীল আর্থিক পরিবেশ নিশ্চিত করে। এছাড়া, ডলারের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেন নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়।

চলতি মাস ও অর্থবছরের ডলার কেনার পরিসংখ্যান

বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রভাব
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নিলাম প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও স্থিতিশীল বাজার নিশ্চিত করে। ডলারের পর্যাপ্ত সরবরাহের ফলে ব্যাংক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালাতে পারে। এছাড়া, নিলামের মাধ্যমে ক্রয়কৃত ডলার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে সুদৃঢ় রাখে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কার্যক্রম দেশের অর্থনীতিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও স্বচ্ছ রাখার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত নিলাম পরিচালনা এবং বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রানীতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।