বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে অপহরণ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল হক এ নির্দেশ দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া আদালত পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুপচাঁচিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রায়হান কবির সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে আছেন:
সানোয়ার হোসেন (৪০), সাজাপুর গ্রামের মাইক্রোবাস চালক।
সাকিব (২৪), করমজি গ্রামের স্থানীয় যুবক।
অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে। স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপচাঁচিয়া সদরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে পিন্টু আকন্দকে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত সোয়া ১১টায় পার্শ্ববর্তী আদমদীঘি উপজেলার কুমারপাড়া এলাকা থেকে পিন্টুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিন্টুর একটি জুতার শোরুম ছিল দুপচাঁচিয়া সদরে এবং তার মূল বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার লোহাচূড়া গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অপহরণের পুরো ঘটনা আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়।
পিন্টুর স্ত্রী সাবিনা খাতুন এই ঘটনায় দুপচাঁচিয়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করে অপহরণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতে হাজিরকৃত দুই আসামি ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময় পিন্টুর নাক ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে প্যাঁচানো ছিল। প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে এবং চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও নির্ধারণ হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিচের টেবিলে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রধান তথ্য সংক্ষেপে দেওয়া হলো:
| তথ্য | বিবরণ |
|---|---|
| নিহত | পিন্টু আকন্দ |
| বয়স | ৪২ (প্রায়) |
| বাড়ি | লোহাচূড়া, রানীনগর, নওগাঁ |
| ব্যবসা | জুতার শোরুম, দুপচাঁচিয়া সদরে |
| গ্রেপ্তারকৃত আসামি | সানোয়ার হোসেন (৪০), সাকিব (২৪) |
| অপরাধের ধরন | অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড |
| মৃত্যু কারণ | শ্বাসরোধ (প্রাথমিক ধারণা) |
| উদ্ধার স্থান | কুমারপাড়া, আদমদীঘি উপজেলা |
| ময়নাতদন্ত | সম্পন্ন, মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরিত |
এ ঘটনায় স্থানীয় জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে তীব্র উদ্বেগ ও শোক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলেছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনের প্ররোচক বা অর্থনৈতিক কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
