ফেসবুক প্রেমে সীমান্ত পাড়ি, ফেরত ফিরিয়ে পাঠালো বিএসএফ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এক বাংলাদেশি তরুণীকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে দিয়েছে। ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, যখন ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা ও যাচাই-বাছাই শেষে বিজিবি ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়ন অর্চনা সুরিন (২৭) নামের ওই নারীকে গ্রহণ করে।

বিজিবি ২৯ ব্যাটালিয়নের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্চনা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে আটক হন। পরে বিএসএফের আহ্বানে পিলার ২৯৯/১ এস-এ বিজিবি উপস্থিত হয়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে গ্রহণ করে। বৈঠকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের পর বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর তাকে ফুলবাড়ী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে অর্চনা সুরিন জানিয়েছেন, তিনি ঢাকায় গার্মেন্টস শিল্পে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে তার সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক দিপংকরের পরিচয় হয় এবং ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দিপংকরের বিয়ের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার আশ্বাসে, সুরিন ১২ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং দিপংকরের বাড়িতে যান। কিন্তু দিপংকরের পরিবার তাদের বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে, ১৪ ডিসেম্বর পতিরাম থানা পুলিশ তাকে আটক করে। অবশেষে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ তাকে নিরাপদে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।

বিজিবি ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এম জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নাগরিকদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো বিজিবির দায়িত্বের অংশ। তিনি আরও বলেন, অর্চনার মতো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব এবং সীমান্ত পাড়ির ঝুঁকি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা প্রদান করে।

এই ঘটনায় স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে, ফেসবুক বা অনলাইন পরিচয় থেকে প্রেমিকের প্রলোভনে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। বিজিবি ও বিএসএফের যৌথ প্রচেষ্টা এবং সতর্ক পদক্ষেপের ফলে নারী নিরাপদে দেশে ফিরেছে। এ ঘটনার মাধ্যমে সীমান্তে অননুমোদিত প্রবেশ রোধ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।

বিজিবি নিয়মিত সীমান্ত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং জনগণকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পুনরায় না ঘটে।