ফুটবল বিশ্বে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তবে তাঁর চরম সমালোচকও একটি বিষয়ে একমত হতে বাধ্য—আর তা হলো ৪০ বছর বয়সে তাঁর অবিশ্বাস্য শারীরিক সক্ষমতা। যেখানে সমসাময়িক অনেক ফুটবলার মাঠ থেকে বিদায় নিয়ে কোচিং বা ধারাভাষ্যে ক্যারিয়ার গড়ছেন, সেখানে সিআরসেভেন (সিআরসেভেন) এখনো আল নাসর (আল নাসর) ও পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে গোলমেশিন হিসেবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভক্তদের ধারণা, ২০২৬ বিশ্বকাপে (ওয়ার্ল্ড কাপ) পর্তুগালকে নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই নিজেকে এতটা কঠোর অনুশাসনে রেখেছেন তিনি। তবে পর্তুগাল কোচ রবার্তো মার্তিনেজ (রবার্তো মার্তিনেজ) মনে করেন, রোনালদোর অপরিহার্যতার পেছনে কেবল ফিটনেস নয়, বরং তিনটি বিশেষ স্তম্ভ কাজ করছে।
সম্প্রতি স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কাকে (মার্কা) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্তিনেজ জানিয়েছেন, বয়স ৪১-এর কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও কেন রোনালদো এখনো তাঁর প্রথম একাদশের প্রধান স্ট্রাইকার। মার্তিনেজের মতে, রোনালদোর মূল শক্তি হলো তাঁর পজিটিভ অ্যাটিচুড (অ্যাটিচুড)। তিনি তিনটি মূল শব্দের মাধ্যমে রোনালদোর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন—প্রতিভা, অভিজ্ঞতা এবং অদম্য মানসিকতা। কোচের ভাষায়, “রোনালদো প্রতিদিন নিজেকে সেরা প্রমাণের যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, তা পুরো দলের মধ্যে একটি ইতিবাচক সংক্রামক শক্তির মতো কাজ করে।”
নিচে রোনালদোর বর্তমান পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্যগুলোর একটি সারসংক্ষেপ দেওয়া হলো:
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ক্যারিয়ার স্ট্যাটিসটিকস ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
| ক্যাটাগরি | বর্তমান তথ্য ও পরিসংখ্যান | বিশেষ পর্যবেক্ষণ |
| পেশাদার ক্যারিয়ার গোল | ৯৫৫টি | ১০০০ গোলের মাইলফলকের খুব কাছে |
| জাতীয় দলে অবদান | ৩০ ম্যাচে ২৫ গোল (সাম্প্রতিক রেকর্ড) | আক্রমণভাগে আজও দলের প্রধান ভরসা |
| মূল প্রভাবক (স্তম্ভ) | প্রতিভা, অভিজ্ঞতা ও মানসিকতা | কোচের মতে দলের ভারসাম্য রক্ষার চাবিকাঠি |
| ব্যালন ডি’অর জয় | ৫ বার | ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব |
| বিশ্বকাপ ২০২৬ লক্ষ্য | গ্রুপ ‘কে’ থেকে শুভসূচনা | শেষবার বিশ্বজয়ের স্বপ্নে বিভোর সিআরসেভেন |
রোনালদোর ১০০০ গোলের মাইলফলক ছোঁয়া নিয়ে ফুটবল বিশ্বে ব্যাপক জল্পনা থাকলেও রবার্তো মার্তিনেজ বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখছেন। তাঁর মতে, রোনালদো বর্তমানে বিশ্বাসী একজন মানুষ। তিনি দীর্ঘমেয়াদি কোনো গাণিতিক লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামেন না; বরং আজকের দিনটিকে কীভাবে সবচেয়ে সফল করা যায়, সেটাই তাঁর মূল মন্ত্র। ১০০০ গোল হবে কি না, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তাঁর ফিটনেস ও অবসরের সিদ্ধান্তের ওপর। মার্তিনেজ মনে করেন, এই মুহূর্তে প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করাই রোনালদোর মূল শক্তি।
২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পর্তুগাল দল এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। গ্রুপ ‘কে’ (গ্রুপ কে) তে পর্তুগালের সঙ্গী হিসেবে আছে উজবেকিস্তান, কলম্বিয়া এবং প্লে-অফ থেকে উঠে আসা একটি দল। আগামী ১৭ জুন ২০২৬ তারিখে পর্তুগাল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে। মার্চ মাসের প্লে-অফে ডিআর কঙ্গো, জ্যামাইকা ও নিউ ক্যালেডোনিয়ার লড়াইয়ের পর নির্ধারিত হবে রোনালদোদের প্রথম প্রতিপক্ষ। মার্তিনেজের বিশ্বাস, বড় টুর্নামেন্টের চাপ সামলাতে রোনালদোর অভিজ্ঞতা দলের তরুণ তুর্কিদের জন্য হবে তুরুপের তাস।
