নারী কাবাডি বিশ্বকাপ ঢাকায়, প্রতিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন ভারত

বাংলাদেশ নারী কাবাডির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করতে প্রস্তুত। প্রথমবারের মতো নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশটি বৈশ্বিক ক্রীড়া মঞ্চে আরও দৃঢ় অবস্থান নিতে যাচ্ছে। আগামীকাল মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হবে দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। উদ্বোধনের আগেই আজ অনুষ্ঠিত হলো ট্রফি উন্মোচন এবং দলগুলোর গ্রুপ ঘোষণা—যা স্বাগতিক দলের জন্য উত্তেজনা ও চ্যালেঞ্জ দুই-ই বয়ে এনেছে।

গ্রুপিং অনুযায়ী বাংলাদেশ উঠেছে শক্তিশালী ‘এ’ গ্রুপে, যেখানে আছে থাইল্যান্ড, উগান্ডা, জার্মানি এবং কাবাডি বিশ্বের সবচেয়ে সফল দল ভারত। ২০১২ সালে প্রথম নারী বিশ্বকাপে ভারতই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, এবং এবারও তারা ফেভারিটদের তালিকায় শীর্ষে। অন্যদিকে ‘বি’ গ্রুপ তুলনামূলক ভারসাম্যপূর্ণ—ইরান, চাইনিজ তাইপে, পোল্যান্ড, নেপাল, জাঞ্জিবার ও কেনিয়া নিয়ে গঠিত এই গ্রুপেও প্রতিযোগিতা জমবে।

বাংলাদেশের স্মৃতি ভালো ২০১২ সালের প্রথম আসর থেকে—১৬ দলের মধ্যে পঞ্চম হওয়া ছিল প্রশংসনীয় অর্জন। তবে এবার ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় চাপ ও প্রত্যাশা দুটোই বেড়েছে। অধিনায়ক রূপালী আক্তার অবশ্য বাস্তববাদী অবস্থান নিয়েছেন। তিনি জানান, “আমরা শিরোপা নিয়ে ভাবছি না। প্রথম আসরের তুলনায় আরও উন্নত পারফরম্যান্সই আমাদের লক্ষ্য।”

তার এই বক্তব্যের পেছনে আবেগও লুকিয়ে আছে—এই আসরই তার শেষ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা রূপালী কখনো অধিনায়ক হননি, তাই জীবনের শেষ টুর্নামেন্টেই নেতৃত্ব পাওয়া তার জন্য এক অনন্য গর্ব। “বিশ্বকাপ দিয়েই বিদায় জানাতে যাচ্ছি। শেষ টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্ব পাওয়া আমার জন্য অনেক বড় সম্মান,” বলেন তিনি।

ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত ছিলেন ১১ দলের অধিনায়কের সঙ্গে। তার সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, আইজিপি ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক এস.এম. নেওয়াজ সোহাগ।

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই স্পষ্ট—স্বাগতিক বাংলাদেশকে শক্ত পরীক্ষা দিতে হবে। তবে ঘরের দর্শক, পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ক্রমোন্নতির তাগিদ দলকে নতুন আত্মবিশ্বাস দেবে। এই আসর তাই বাংলাদেশের নারী কাবাডির জন্য শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়—বরং সম্ভাবনার নতুন জানালা।