নাঈমের ১ কোটি ১০ লাখ টাকার কী হবে? চট্টগ্রাম রয়্যালস সংকটে, দায়িত্ব নিল বিসিবি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরুর আগমুহূর্তে বড় ধরনের নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খেলোয়াড় নিলামে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছিল চট্টগ্রাম রয়্যালস। দলটি সর্বোচ্চ দর হাঁকিয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায় জাতীয় দলের ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে দলে নেয়, যা নিলামের অন্যতম বড় চমক ছিল। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক এক দিন আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকানা ছেড়ে দেওয়ায় তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা—নাঈমসহ দলের ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের ভবিষ্যৎ কী?

চট্টগ্রাম রয়্যালসের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ট্রায়াঙ্গুল সার্ভিস আর্থিক সংকটের কথা জানিয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ানোর আবেদন করেছে। জানা গেছে, পর্যাপ্ত স্পন্সর না পাওয়া এবং খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক পরিশোধে ব্যর্থ হওয়াই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ। বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হলেও তাদের অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই অবস্থায় দ্রুত হস্তক্ষেপ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টুর্নামেন্টের ভাবমূর্তি ও খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষায় চট্টগ্রাম রয়্যালসের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছে বোর্ড। স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—তারা কি পুরো পারিশ্রমিক পাবেন?

এ বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান। তিনি জানান,
“আজ সকালে আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বসেছি। যাদের সঙ্গে বৈধ চুক্তিপত্র রয়েছে, তারা শতভাগ পারিশ্রমিক পাবেন। আর যাদের কাগজপত্র সম্পূর্ণ হয়নি, তাদের সঙ্গে বিসিবি নতুন করে চুক্তি করবে।”

এই ঘোষণায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রিকেটারদের মধ্যে, বিশেষ করে মোহাম্মদ নাঈমের মতো উচ্চমূল্যের খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে। বিসিবির তত্ত্বাবধানে দল পরিচালিত হওয়ায় আর্থিক নিশ্চয়তা নিয়ে বড় ধরনের শঙ্কা আপাতত কেটে গেছে।

এদিকে চট্টগ্রাম রয়্যালসের জন্য নতুন ম্যানেজমেন্ট টিমও ঘোষণা করেছে বিসিবি। অভিজ্ঞ সাবেক ক্রিকেটারদের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে দলকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

চট্টগ্রাম রয়্যালস: নতুন ব্যবস্থাপনা কাঠামো :

দায়িত্বনাম
মেন্টরহাবিবুল বাশার
প্রধান কোচমিজানুর রহমান
ম্যানেজারনাফিস ইকবাল

বিশ্লেষকদের মতে, বিসিবির সরাসরি তত্ত্বাবধানে দল পরিচালিত হওয়ায় মাঠের বাইরের অস্থিরতা কমবে এবং খেলোয়াড়রা মনোযোগ দিতে পারবেন পারফরম্যান্সে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টে এমন ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা।

সব মিলিয়ে, মোহাম্মদ নাঈমের ১ কোটি ১০ লাখ টাকার পারিশ্রমিকসহ চট্টগ্রাম রয়্যালসের ক্রিকেটারদের অর্থ পাওয়ার পথ আপাতত পরিষ্কার। এখন দেখার বিষয়, মাঠের ক্রিকেটে এই দল কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।