নড়াইলের চাঞ্চল্যকর মাসুম ফকির (৩৫) হত্যা মামলার দীর্ঘ ৮ বছর পর রায় ঘোষণা করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেম ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে আদালত প্রেমিকা ও তাঁর সহযোগীকে কঠোর দণ্ড প্রদান করেছেন।
সোমবার দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের এই রায়কে কেন্দ্র করে এলাকায় বিচারপ্রার্থী মানুষের মধ্যে সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।
আদালতের রায় একনজরে
মামলায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বিচারক ভিন্ন ভিন্ন দণ্ড প্রদান করেছেন:
| দণ্ডিত ব্যক্তি | দণ্ডের বিবরণ | আর্থিক জরিমানা |
| আশা বেগম (৩০) | যাবজ্জীবন কারাদণ্ড | ২০,০০০ টাকা (অনাদায়ে অতিরিক্ত সাজা) |
| আরাফত শেখ (৩২) | যাবজ্জীবন কারাদণ্ড | ২০,০০০ টাকা (অনাদায়ে অতিরিক্ত সাজা) |
| রোমান ভূঁইয়া (৩৩) | ০৭ বছরের কারাদণ্ড | অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড |
| শাবানা খাতুন | বেকসুর খালাস | প্রযোজ্য নয় |
হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট ও টাইমলাইন
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের শেষভাগে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল।
নিখোঁজ: ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ রাতে নড়াইল সদর উপজেলার নাকশী গ্রামের মাসুম ফকির বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি।
মরদেহ উদ্ধার: পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁকে পাননি। ৫ দিন পর, ১৩ ডিসেম্বর লোহাগড়া উপজেলার জালালশি গ্রামের একটি বাড়ির পাশ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলা দায়ের: নিহত মাসুমের ছোট ভাই শহিদুল ফকির বাদী হয়ে আশা বেগমকে প্রধান আসামি করে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত ও বিচারিক পর্যবেক্ষণ
পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, মাসুম ফকিরের সঙ্গে আশা বেগমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে এই সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং অন্যান্য আসামিদের যোগসাজশে মাসুমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এস এম আব্দুল হক রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান যে, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
