দুই শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে হামলায় প্রেস সচিব প্রকাশ্যে জানালেন গভীর লজ্জা

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিজের দায়িত্বগত ব্যর্থতা স্বীকার করে প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সাবেক সাংবাদিক শফিকুল আলম বলেন, ‘সাবেক সাংবাদিক হিসেবে আমার বক্তব্য এটুকুই—আমি অত্যন্ত দুঃখিত।’

ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গত রাতের ঘটনায় ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ভেতরে আটকা পড়া সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে বারবার সাহায্যের জন্য ফোন পেয়ে আমি দিশাহীন হয়ে পড়েছিলাম। তাদের অসহায় কণ্ঠ আজও আমাকে তাড়া করছে। আমি সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, সংশ্লিষ্ট সবাইকে ফোন করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা সময়মতো সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, যখন নিশ্চিত হন যে ডেইলি স্টারের ভিতরে আটকা পড়া সকল সাংবাদিককে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে, তখন তিনি ঘুমাতে যান। কিন্তু ততক্ষণে দেশের দুটি শীর্ষ সংবাদমাধ্যম ভয়াবহ সহিংসতা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের শিকার হয়ে গেছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শফিকুল আলম প্রকাশ করেছেন, ‘আমি লজ্জিত। জানি না কোন ভাষায় এই ক্ষতির সান্ত্বনা দেওয়া সম্ভব। মনে হচ্ছে, যদি পারতাম, নিজেকে লজ্জায় মাটির নিচে চাপা দিতাম।’ তিনি একটি সাবেক সাংবাদিক হিসেবে নিজের দায়িত্বের সীমাবদ্ধতাকে গভীরভাবে অনুভব করছেন।

ঘটনার পটভূমি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাত ১২টার দিকে একটি জনতা প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো এবং পরে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে উভয় সংবাদমাধ্যমের অনেক সাংবাদিক ভবনের ভিতরে আটকা পড়ে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের সম্পাদক নূরুল কবীরও বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়েন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শফিকুল আলমের প্রকাশিত দুঃখ শুধু ব্যক্তিগত অনুতাপ নয়, এটি দেশের সাংবাদিক সমাজে নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীলতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্ট ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে অনেকেই এই সহিংসতা প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।