ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে

বিশ্বকাপ ফুটবল কেবল একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়; এটি আন্তর্জাতিক পর্যটন, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং মানুষের মিলনের এক মহান উৎসব। তবে ২০২৬ সালের আসন্ন বিশ্বকাপের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগের ছায়া নেমেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক ঘোষণায় আফ্রিকার দুটি বিশ্বকাপ অংশগ্রহণকারী দেশ, সেনেগাল এবং আইভরি কোস্ট, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের সাধারণ সমর্থকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকে কঠিন ও প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।

হোয়াইট হাউজ মঙ্গলবার প্রকাশিত ঘোষণায় জানায়, সেনেগাল ও আইভরি কোস্টের নাগরিকদের ওপর ‘আংশিক প্রবেশ সীমাবদ্ধতা’ আরোপ করা হয়েছে। ব্যবসা ও পর্যটন ভিসার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আপাতত স্থগিত থাকবে। এই ভিসা সাধারণত বিশ্বকাপ দর্শক ও পর্যটকরা ব্যবহার করেন। ফলে হাজারো সমর্থকের জন্য স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে ভিসার মেয়াদ অতিক্রম বা ‘ওভার স্টে’। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেনেগালের ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ৪ শতাংশ এবং আইভরি কোস্টে ৮ শতাংশেরও বেশি। শিক্ষা বা সাংস্কৃতিক বিনিময় ভিসার ক্ষেত্রে এই হার আরও উদ্বেগজনক; সেনেগালে ১৩ শতাংশ এবং আইভরি কোস্টে প্রায় ১৯ শতাংশ নাগরিক নিয়ম না মেনে অবস্থান করছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ। তবে খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, কূটনীতিক এবং যারা ‘জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য’, তাদের জন্য এই নিষেধাজ্ঞার ব্যত্যয় রয়েছে। অর্থাৎ মাঠে নামতে কোনো সমস্যা হবে না সেনেগালের এনদিয়ায়ে, জ্যাকসন বা আইভরি কোস্টের দিয়ালো, এভানদের মতো তারকাদের। তবে যারা তাদের সমর্থন করতে স্টেডিয়ামে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাদের জন্য এটি এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

বিশ্বকাপের আগেই এই বিতর্ক আন্তর্জাতিক ফুটবল সম্প্রদায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন, সরাসরি খেলা দেখার স্বপ্ন এবার অনেকের কাছে দূরপ্রাপ্য হয়ে যেতে পারে। ফুটবলপ্রেমীদের মনে এখন উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তার ছায়া বিরাজ করছে, যা ২০২৬ সালের মহোৎসবের আনন্দকে কিছুটা আড়াল করতে পারে।