জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৩.৮০ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছেন। এই ফলাফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যথেষ্ট চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম। তিনি বলেন, “ফল প্রকাশিত হয়েছে এবং যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা আগামী ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। তবে এই বছর পাসের হার অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে মোট ২০,৫৮৩ জন ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ১৭,৭৩৪ জন, যা মোট আবেদনকারীর ৮৬.১৬ শতাংশ। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২,৪৪৭ জন, অর্থাৎ মাত্র ১৩.৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই সফল হয়েছেন।
উল্লেখযোগ্য, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ‘বি’ ইউনিটের মোট আসনসংখ্যা ৩২৬টি। সাধারণত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময় মোট আসনের প্রায় ১০ গুণের বেশি শিক্ষার্থীকে মেরিট তালিকায় রাখা হয়। তবে পাসের হার কম হওয়ায় এই বছর তা সম্ভব হয়নি। এছাড়া পরীক্ষা চলাকালে কিছু শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় তথ্য ঠিকভাবে পূরণ না করায় ৫৮ জনের ওএমআর শিট বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল ৯টা থেকে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ছাত্রীদের দুই পালা এবং ছাত্রদের এক পালা নিয়ে মোট ৩টি প্যালায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার দিন থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত প্রশাসনিকভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, “পাসের হার কম হওয়ায় আমরা হতাশ, তবে যারা পাশ করেছেন, তাদের জন্য এটি এক বড় অর্জন।” অভিভাবকরা মনে করছেন, ফলাফলের এই হারের পেছনে ছাত্রদের প্রস্তুতির মান, পরীক্ষার কষ্টের মাত্রা এবং কিছু শিট বাতিলের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বি ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত মূল তথ্য :
| বিষয় | তথ্য |
| শিক্ষাবর্ষ | ২০২৫-২০২৬ |
| ইউনিট | বি (সমাজবিজ্ঞান অনুষদ) |
| আবেদনকারী | ২০,৫৮৩ জন |
| পরীক্ষায় অংশগ্রহণ | ১৭,৭৩৪ জন (৮৬.১৬%) |
| উত্তীর্ণ | ২,৪৪৭ জন (১৩.৮০%) |
| মোট আসন | ৩২৬ টি |
| বাতিল ওএমআর শিট | ৫৮ টি |
| পরীক্ষার তারিখ | ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ |
| পরীক্ষার পালা | ছাত্রীদের ২টি, ছাত্রদের ১টি (মোট ৩টি) |
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, যারা পাশ করেছেন তারা যথাযথভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। যারা ফেল করেছেন, তাদের জন্য আগামী বছর আরও সুযোগ থাকবে। এছাড়া প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ও পরীক্ষার শৃঙ্খলা নিয়ে পর্যবেক্ষণ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
