জর্জা স্মিথের কণ্ঠ নকলের অভিযোগ, এআই–নির্মিত গানের বিরুদ্ধে লেবেলের অবস্থান

ব্রিট অ্যাওয়ার্ডজয়ী শিল্পী জর্জা স্মিথের রেকর্ড লেবেল জানিয়েছে, তারা এমন একটি গানের রয়্যালটির অংশ চাইছে, যা তাদের দাবি অনুযায়ী শিল্পীর কণ্ঠের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্মিত নকল সংস্করণ ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে।

ব্রিটিশ ড্যান্স অ্যাক্ট হেভেনের গান আই রান অক্টোবর মাসে টিকটকে ভাইরাল হয়, যেখানে অজ্ঞাত একটি নারী কণ্ঠের স্মুথ সোল ভোকাল ছিল প্রধান আকর্ষণ। গানটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চার্টে ওঠার পথে থাকলেও, রেকর্ড শিল্পের সংস্থাগুলোর টেকডাউন নোটিশের পর স্ট্রিমিং সার্ভিসগুলো গানটি নিষিদ্ধ করে। অভিযোগ ছিল—গানটি আরেক শিল্পীর কণ্ঠ নকল করে কপিরাইট লঙ্ঘন করেছে।

নতুন ভোকাল সংযোজন করে আই রান পুনরায় প্রকাশিত হলেও স্মিথের লেবেল এফএএমএম মনে করে, গানটি তার কাজের ওপর প্রশিক্ষিত এআই ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এবং তারা ক্ষতিপূরণ চাইছে। ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতিতে এফএএমএম লিখেছে, “এটি শুধু জর্জার বিষয় নয়। এটি এক শিল্পী বা এক গানের চেয়ে বড়।”

লেবেলের দাবি, “গানটির উভয় সংস্করণই জর্জার অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং তিনি যেসব গীতিকারদের সঙ্গে কাজ করেন তাদের সবার শ্রমকে অন্যায়ভাবে কাজে লাগিয়েছে।”

স্মিথ বিখ্যাত তার বিয়ি অনেস্ট এবং লিটল থিংসের মতো গানের জন্য, এবং ২০১৯ সালে ব্রিট অ্যাওয়ার্ডে সেরা ব্রিটিশ নারী শিল্পীর খেতাব পান। লেবেলের মতে, হেভেনের গানটি ভক্তদের বিভ্রান্ত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “এটি নতুন নিয়মে পরিণত হতে দেওয়া যায় না।”

গানটির নির্মাতারা এআই ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। প্রযোজক ও গান লেখক হ্যারিসন ওয়াকার জানান, মূল ভোকাল ছিল তার নিজের, তবে সেগুলো সুনো নামের মিউজিক জেনারেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে।

অন্য প্রযোজক ওয়েপয়েন্ট, যার প্রকৃত নাম জেকব ডোনাহিউ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন যে তারা এআই ব্যবহার করেছেন “আমাদের মূল ভোকালকে নারীকণ্ঠে রূপ দিতে।” ডোনাহিউ এবং ওয়াকার দাবি করেন, গানটি তাদের লেখা ও প্রযোজনা করা, এবং তারা বিলবোর্ড ম্যাগাজিনে তাদের কম্পিউটার ফাইলের ভিডিওও শেয়ার করেছেন।

ওয়াকার বলেন, “আমি আই রান গানে শুধু নিজের কণ্ঠ ব্যবহার করেছি, তবে এআই-সহায়ক ভোকাল প্রক্রিয়ায় তা রূপান্তরিত করেছি—এটা গোপন বিষয় নয়।” তিনি যোগ করেন, তিনি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে ভালোবাসেন।

সুনো স্বীকার করেছে যে তাদের সফটওয়্যার কপিরাইটযুক্ত কাজের ওপর প্রশিক্ষিত, এবং তারা দাবি করেছে এটি ফেয়ার ইউস আইনের আওতায় বৈধ। তবে জর্জা স্মিথের রেকর্ডিং ওই ডেটায় ছিল কি না তা জানা যায়নি। হেভেন জানায়, তারা কেবল সফটওয়্যারকে “সোলফুল ভোকাল স্যাম্পল” ব্যবহার করতে বলেছিল।

মূল সংস্করণটি যুক্তরাজ্যের অফিসিয়াল চার্টস কোম্পানি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ড চার্ট থেকে স্থগিত হলেও, নতুন সংস্করণটি গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য টপ ৪০–এ প্রবেশ করেছে।

এফএএমএম গানটিকে সংগীত শিল্পের সঙ্গে এআই–এর সম্পর্কের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখছে। তারা বলে, এআই দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করছে এবং নিয়ন্ত্রণের তুলনায় অনেক এগিয়ে যাচ্ছে, তাই তাদের কথা বলা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এআই তৈরি উপাদান স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা উচিত, যাতে জনসাধারণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা এটি ব্যবহার করবে কি না।”