রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য শিক্ষকরা উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন এবং নতুন শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত রাখার দাবিও তোলেন।
বৈঠকে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব), জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এবং জিয়া পরিষদ। শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম অভিযোগ করেন, “একটি নির্দিষ্ট ছাত্র গোষ্ঠী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করছে। তারা কার্যালয়ে তালা দিচ্ছে এবং চাপ সৃষ্টি করছে। এটি কোনো ছাত্রের দায়িত্ব নয়।”
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের আচরণকে অছাত্রসুলভ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন ও মারমুখী আচরণ বন্ধ করার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
পদত্যাগ করা ছয় ডিন
উপাচার্য সম্প্রতি আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন। এই ছয় ডিন হলেন:
| অনুষদ | ডিনের নাম | মন্তব্য |
|---|---|---|
| আইন | আবু নাসের মো. ওয়াহিদ | পদত্যাগ |
| বিজ্ঞান | ড. নাসিমা আখতার | পদত্যাগ |
| ব্যবসায় শিক্ষা | অধ্যাপক ড. এ এস এম কামরুজ্জামান | পদত্যাগ |
| সামাজিক বিজ্ঞান | অধ্যাপক এস এম একরাম উল্লাহ | পদত্যাগ |
| প্রকৌশল | বিমল কুমার প্রামাণিক | পদত্যাগ |
| ভূ-বিজ্ঞান | এ এইচ এম সেলিম রেজা | পদত্যাগ |
ডিন নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও উপাচার্য ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের দায়িত্বে রাখার নির্দেশ দেন। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তারা পদত্যাগ করেন। রাকসু জিএস আম্মার এ পদত্যাগের জন্য আলটিমেটাম দেন এবং ডিনদের সঙ্গে মিডিয়ার সামনে পদত্যাগপত্র উপস্থাপন করেন। পরে কিছু শিক্ষার্থী কার্যালয়ে তালা দেন।
রুটিন দায়িত্বে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য
ছয় ডিনের অপসারণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও দুই উপ-উপাচার্য রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ববণ্টন নিম্নরূপ:
| দায়িত্ব | দায়িত্বে থাকা শিক্ষক |
|---|---|
| বিজ্ঞান ও প্রকৌশল | উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব |
| ব্যবসায় শিক্ষা ও আইন | উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মাদ মাঈন উদ্দীন |
| ভূ-বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান | উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান |
শিক্ষক ও ছাত্রদল উভয়ই নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দিয়েছেন। বর্তমানে রাবি প্রশাসনে উত্তেজনা কমাতে ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সকল পক্ষ সচেষ্ট।
