ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ এলাকায় আটটি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯–এর ৭ ধারায় মামলা করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুন নূর ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
আকলিমা খাতুন জানান, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে মামলাটি করা হয় এবং ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি বেগমকে এতে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার এটিকে অমানবিক বলে উল্লেখ করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেন। মহাপরিচালকও মামলার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত নয়নের পরিবারকে সরকারি কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তারা কোয়ার্টার খালি করেছে। পাশাপাশি এনিমেল অ্যাকটিভিস্ট কমিটির একটি দল ঢাকা থেকে এসে তদন্ত শুরু করে।
সোমবার সকালে মৃত কুকুরছানার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শহরজুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন এবং ঘটনাটি অনলাইন ও জাতীয় দৈনিকে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, অভিযোগের পর নয়নকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কোয়ার্টার ছাড়তে, যা তিনি পালন করেছেন। তবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
নিশি আকতার বলেন, কুকুরছানাগুলো সিঁড়ির নিচে থাকত এবং বিরক্ত করায় তিনি ব্যাগে ভরে পুকুরপাড়ে রেখে আসেন, তবে পুকুরে ফেলেননি। রবিবার সন্ধ্যার পর ছানাগুলো ডুবে মারা যায়। মা কুকুরটি নিখোঁজ ছানাদের খুঁজে রাতভর আর্তচিৎকার করে। সোমবার সকালে নয়নের ছেলে জানায়, তার মা ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলেছেন। পরে পুকুর থেকে বস্তা তুলতে গিয়ে আটটি মৃত ছানা পাওয়া যায়।
ছানাগুলো মৃত অবস্থায় দেখে মা কুকুরটি ভেঙে পড়ে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মীরা তাকে চিকিৎসা দিয়ে সেডেটিভ ইনজেকশন দেন।
টিএসএন
