অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতে অগ্রগতি স্বচ্ছ

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সোমবার জানিয়েছেন, দেশের আর্থিক খাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে, যদিও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যেই বিস্তৃত সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

গভর্নর বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক রিজার্ভ হ্রাস, খেলাপি ঋণের বৃদ্ধি, তরলতার সংকট এবং বাণিজ্যিক প্রবাহে বাধা ছিল। তিনি বলেন, “মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল না হলে মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই সফল হতো না।”

তিনি জানান, দায়িত্ব নেওয়ার সময় টাকার বিনিময় হার প্রায় ১২০ টাকা প্রতি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি ছিল। বর্তমান বাজারভিত্তিক ব্যবস্থায় তা স্থিতিশীল হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যা প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার ছিল, তা এক বছরের মধ্যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।

গভর্নর স্পষ্ট করেছেন যে সুদের হার অবিলম্বে কমানো সম্ভব নয়। মূল্যস্ফীতি কমে আসলেও ন্যূনতম ধনাত্মক নীতি হার বজায় রাখা জরুরি। তিনি বলেন, “মুদ্রানীতি সম্পূর্ণভাবে বাজারভিত্তিক থাকবে। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ নেই।”

তিনি আরও বলেন, সরকারের ঋণ গ্রহণ অর্থবাজারে চাপ সৃষ্টি করছে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ধরনের টাকা মুদ্রণ থেকে বিরত রয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, বাস্তব খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন লুকানো ছিল, তবে এখন প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে যা ৩৫ শতাংশের বেশি।

ড. মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই ১৪টি ব্যাংকের নেতৃত্ব পুনর্গঠন করেছে, ৫টি ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ৯টি অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমাধান করেছে, এবং গুরুত্বপূর্ণ আইন সংস্কার কার্যক্রম যেমন ডিপোজিট ইনসুরেন্স আইন, ব্যাংক রেজোলিউশন অর্ডিন্যান্স এবং ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধনী এগিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারও পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে যাতে স্বায়ত্তশাসন ও দায়বদ্ধতা আরও দৃঢ় হয়।

এজে